সূরা ফজর-এর ১৯ নং আয়াতের তাফসীর


وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلاً لَمّاً
শব্দার্থঃ وَتَأْكُلُونَ = এবং তোমরা খাও, হস্তগত কর, কুক্ষিগত কর। التُّرَاثَ = মীরাছ তথা মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পত্তি, أَكْلاً لَمًّا = অধিক পরিমাণে খাওয়া বা সম্পূর্ণরূপে দখল করা।
অর্থঃ এবং তোমরা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত কর। [আয়াত ১৯]

তাৎপর্যঃ
وَتَأْكُلُونَ :
এবং তোমরা খাও- এটা বলার দ্বারা শাব্দিক অর্থ উদ্দেশ্য নয়। বরং এর দ্বারা রূপকার্থ উদ্দেশ্য। তা হল, উক্ত সম্পদ দ্বারা উপকৃত হওয়া। সম্পদ দখল করা, কুক্ষিগত করা
التُّرَاثَ :
মীরাছ বা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি। التُّرَاث শব্দটির মূল হল الوُرَاث। واو কে تاءদ্বারা কিয়াসবিহীন পরিবর্তন করা হয়েছে। التُّرَاث শব্দটি معرفة বা নির্দিষ্ট হয়েছে। এখানে ال টি মুদ্বাফ ইলাইহি থেকে পরিবর্তন হয়ে এসেছে। অর্থাৎ- تُرَاثَ الْيَتَامَى وَالنِّسَاءِ। জাহেলী যুগে লোকেরা এতীম ও নারীদেরকে মীরাছ থেকে বঞ্চিত করত। এখানে وَتَأْكُلُونَ الْمَالَ না বলে وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ বলার কারণ হল, তুরাছ হল উক্ত সম্পদ যেটার মালিক মারা যায়। ফলে, উক্ত সম্পদ তার উত্তরসূরীরা জন্মগত এবং সম্পর্কগত ভাবে পেয়ে থাকে। তবে ছোট হওয়া এবং নারী হওয়ার কারণে তা জোর করে দখল করতে অপারগ হয়।( )
أَكْلاً لَمًّا :
أَكْلاً
এখানে مفعول مطلق বা ক্রিয়াবাচক কর্ম হয়েছে। মানে খাওয়ার মতো করে খাওয়া। আর এর বিশেষণ হয়েছে لَمًّا। لَـمٌّ মানে সংগ্রহ করা, সম্পূর্ণরূপে বা অধিকহারে। এটা মাসদার। তবে এটা বিশেষণ হওয়ার কারণে কর্তৃকারকের অর্থ দেবে। অর্থাৎ- أَكْلاً لَامًّا। আর মাসদার যখন কৃর্তকারক অথবা কর্মকারকের অর্থ দেয় তখন এটা আধিক্য অর্থ বোঝায়। অর্থাৎ অধিক পরিমাণে বা সম্পূর্ণরূপে খায়। সে হালাল-হারামের বাছবিচার করে না। তারা নিজেদের সম্পদও খায় এবং অন্যায়ভাবে অন্যদের সম্পদও খায়। তারা অন্যদের সম্পদ সর্বতোভাবে কুক্ষিগত করে। হারাম-হালালের বাছবিচার না করে সম্পদ সংগ্রহ দুই প্রকারে হয়ে থাকে। একটি স্বয়ং সম্পদের সাথে সম্পর্কিত। অর্থাৎ- যে ব্যক্তি মারা গিয়ে তার সম্পদ রেখে যায় তা হালাল নাকি হারাম সেদিকে খেয়াল না করে সম্পদ সংগ্রহ করা। হতে পারে তার পরিত্যক্ত কিছু সম্পদ হালাল এবং কিছু সম্পদ হারাম। আর দ্বিতীয়টি হল, উক্ত সম্পদের হকদার কারা সেদিকে খেয়াল না করে বা তাদের প্রাপ্য না দিয়ে সম্পদকে নিজের দখলে নেয়া। ইমাম হাসান বসরী বলেন, তারা নিজের অংশও খায় এবং অন্যের অংশও খায়।( )
ইমাম যমখশরী বলেন, এটাও সম্ভাবনা রাখে যে, এ আয়াত দ্বারা ওয়ারিছকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে যে অতি সহজে বিনা কষ্টক্লেশে সম্পদ লাভ করেছে। অতঃপর সে তা অপচয় করে এবং অধিক পরিমাণে আহার গ্রহণে ব্যয় করে। যেমন, মুখরোচক সুস্বাদু খাবার, নানাজাতীয় পানীয় এবং ফলমুল, ইত্যাদি।( )

তাৎপর্যগত অর্থঃ
এবং তোমরা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ হালাল-হারামের বাছবিচার না করেই সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত কর।

Share this:

Leave a Comment

slot resmi jambitoto sumseltoto punktoto situs toto punktoto toto slot rupiahbet rupiah bet rupiahbet rupiah bet rupiah bet rupiah bet sumseltoto toto slot sumseltoto situs toto sumseltoto situs toto sumseltoto sumsel tototest